শেষ আপডেট: 6th December 2024 11:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেশের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইআইটি খড়্গপুরে প্রায় অচলাবস্থার দশা। কেন্দ্রীয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে শিক্ষক নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব, প্রতিহিংসামূলক আচরণ এবং ক্যাম্পাসের নিজস্ব একটি হাসপাতাল তৈরির ব্যর্থতা নিয়ে শিক্ষককুলের অভিযোগ ক্রমশ ধূমায়িত হচ্ছে। এর মধ্যে তাঁদের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিস জারি করায় প্রশাসন-শিক্ষক জটিলতা আরও গভীর হয়ে উঠেছে। প্রায় ৯০ জন অধ্যাপককে একসঙ্গে কারণ দর্শানোর নোটিসকে ঘিরে দুপক্ষের ফাটল আরও চওড়া হয়ে উঠেছে।
গত ৪ ডিসেম্বর আইআইটি খড়্গপুরের প্রায় শখানেকের বেশি অধ্যাপক অধ্যাপক বিকেলে এর প্রতিবাদে মৌন মিছিল বের করেন ক্যাম্পাস চত্বরে। আইআইটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (IITTA) কার্যনির্বাহী পদাধিকারী এবং ৮৬ জন অধ্যাপককে শোকজ নোটিস ধরানোর প্রতিবাদে এই প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। অধ্যাপকদের দাবি ছিল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পঠনপাঠনের সুপরিবেশ তৈরি করতে হবে।
গণদাবিতে স্বাক্ষর করা তিন বিভাগীয় প্রধানকে বদলির নির্দেশ জারি করেছে ইনস্টিটিউট। তা নিয়েও অধ্যাপকদের মধ্যে বিস্তর ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। প্রতিবাদী শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শাস্তিমূলক ও প্রতিহিংসামূলক নির্দেশগুলি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তাঁরা প্রতীকী কালো ব্যাজ পরে কাজ করে যাবেন। প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক আধিকারিকদের এই নির্দেশ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কেউ কেউ।
সংঘাতের সূত্রপাত গত সেপ্টেম্বরে। আইআইটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রককে একটি গণদাবিপত্র পাঠানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সূত্রপাত। তাতে বলা হয়, ইনস্টিটিউটে বিধিবর্হিভূত নিয়োগ এবং অন্যান্য অনিয়ম চলছে। বর্তমান ডিরেক্টর ভি কে তেওয়ারিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় ওই অভিযোগে। মন্ত্রকের কাছে নতুন ডিরেক্টর বদলির আর্জি জানানো হয়েছিল। তেওয়ারির কার্যকালের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে।
এরপরেই ইনস্টিটিউটের তরফে শৃঙ্খলাভঙ্গের ব্যবস্থা হিসেবে টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের চারজন কার্যনির্বাহী পদাধিকারীর বিরুদ্ধে কারণ দর্শাতে বলা হয়। সূত্রে খবর, তাঁদের এক সপ্তাহের মধ্যে অভিযোগের প্রমাণ হাজির করতে হবে। তাঁরা এর জবাবে একমাসের সময় চান। এর প্রতিবাদে সংস্থার ৮৬ জন অধ্যাপক একটি গণ-আবেদন জমা দেন ডিরেক্টরের কাছে। তাঁদের দাবি ছিল, এই নির্দেশ প্রত্যাহার না করলে না তাঁরা অনশন আন্দোলনে যাবেন। কিন্তু, ডিরেক্টর তাতে না দমে গিয়ে ওই অধ্যাপকদের বিরুদ্ধেও শোকজ নোটিস জারি করেন।
এর প্রতিবাদে প্রথমে বুধবার এবং পরদিন বৃহস্পতিবার প্রায় ১০০-র বেশি অধ্যাপক কালো ব্যাজ পরে মৌন মিছিল করেন ক্যাম্পাস চত্বরে। সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসনিক এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। প্রশাসন অঙ্ক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং জৈববিজ্ঞান ও জৈব প্রযুক্তি বিভাগের প্রধানদের সরিয়ে দেয় বুধবার। কিন্তু, তার জন্য কোনও যুক্তি দেখানো হয়নি।