শেষ আপডেট: 1st August 2024 13:26
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেশে তফসিলি জাতি ও জনজাতি বা আদিবাসীদের সরকারি চাকরি ও শিক্ষায় চলতি সংরক্ষণ নিয়ে বৃহস্পতিবার গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত বলেছে, এসসি এবং এসটি ভুক্ত জাতিগুলির জন্য আর্থিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে সাব কোটা চালু করা যেতে পারে। তাতে আর্থিকভাবে বেশি পশ্চাৎপদদের অগ্রাধিকার দিতে পারবে সরকার। এতদিন সরকারের এই ক্ষমতা ছিল না। এখন কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের জন্য যথাক্রমে ১৫ ও ৭.৫ শতাংশ পদ/আসন সংরক্ষিত। বৃহস্পতিবারের রায় অনুযায়ী তফসিলিদের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে আর্থিক মানদণ্ডে এই সুবিধা ভাগ করে দিতে পারবে সরকার। কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্য সরকারগুলিও একই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। পশ্চিমবঙ্গে এই দুই সম্প্রদায়ের সংরক্ষণের মাত্রা যথাক্রমে ২২ ও ৬ শতাংশ।
২০০৪ সালে এক মামলায় অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্ট উল্টো রায় দিয়েছিল। আদালত তখন বলেছিল, তফিসিলি জাতি ও জনজাতিদের মধ্যে সাব-কাস্ট বা উপ ভাগ করা যাবে না। তাদের অভিন্ন জাতি হিসাবে বিবেচনা করতে হবে।
সেই রায় পাল্টে দিয়ে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সাত সদস্যের বেঞ্চের ছয় বিচারপতি এই রায়ের পক্ষে সায় দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকার এসসি এবং এসটি ভুক্ত সম্প্রদায়গুলির মধ্যে সাব কাস্ট চিহ্নিত করে তাদের জন্য সংরক্ষণের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিল।
বৃহস্পতিবারের রায়কে ঐতিহাসিক বলার কারণ, স্বাধীনতার পর ৭৫ বছর কেটে গেলেও তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের মধ্যে সংরক্ষণের সুবিধা সমানভাবে বণ্টিত হয়নি। এই সংরক্ষণ সংবিধান প্রদত্ত এবং জন্মসূ্ত্রে প্রাপ্ত। দেখা গিয়েছে তফসিলি এবং জনজাতিদের মধ্যে আর্থিকভাবে অগ্রবর্তী অংশই সংরক্ষণের সুবিধা পেয়ে আসছে। সম্প্রদায়ের সব মানুষ সংরক্ষণের সুবিধা পাচ্ছেন না। সংরক্ষণের সুবিধার সুষম বণ্টন করতে হলে সাব কোটা চালু করা জরুরি।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, শীর্ষ আদালতের রায়ে রাহুল গান্ধীর জাতি গণনার দাবি পরোক্ষে মান্যতা পেল। কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহারেও বলা আছে দল ক্ষমতায় এলে কাস্ট সেন্সাসের ব্যবস্থা করা হবে। বাজেট বিতর্কেও বিরোধী দলনেতা রাহুল বারে বারে প্রশ্ন তোলেন কেন কেন্দ্র কাস্ট সেন্সাস করাচ্ছে না। জবাবে রাহুলের কাস্ট বা জাতিগত পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে শোরগোল বাঁধিয়ে দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন শীর্ষ কোর্টের রায় মেনে সংরক্ষণ দিতে হলে কাস্ট সেন্সাস করাতে হবে কেন্দ্রকে। রাহুলের ‘জিতনা আবাদি উতনা হক’ স্লোগান বাস্তবায়ন করতে হলে কেন্দ্রকে জানতে হবে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের মধ্যে কতগুলি সাব কাস্ট আছে।